নাক্ষত্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞান/হিলিয়াম ঝলক

testwiki থেকে
imported>MdsShakil কর্তৃক ১৯:৫৬, ২৯ অক্টোবর ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (+)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
  • লোহিত দানব শাখার চূড়ায় যখন হিলিয়াম দহন শুরু হয় তখন তারার কেন্দ্রের তাপমাত্রা এবং ঘনত্ব থাকে যথাক্রমে 8×107K এবং 106gmcm3. ঘনত্ব এত বেশি হওয়ার কারণে ইলকট্রন সম্পূর্ণ অপজাত অবস্থায় থাকে। এই দশায় কেন্দ্রের গ্যাসের চাপ তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে না, নির্ভর করে অপজাত্যের উপর।
  • কোন অপজাত্য না থাকলে এমনটি ঘটে: নতুন শক্তির উৎস তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে গ্যাসের চাপও বেড়ে যায় এবং হাইড্রোস্ট্যাটিক সাম্যাবস্থা ধরে রাখার জন্য অঞ্চলটি সম্প্রসারিত হতে শুরু করে। এই সম্প্রসারণের ফলে তাপমাত্রা কমে যায় এবং তা নতুন শক্তি উৎসের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
  • কিন্তু অপজাত্য থাকলে, নতুন শক্তি উৎসের কারণে তাপমাত্রা বাড়া সত্ত্বেও তা চাপকে প্রভাবিত করতে পারে না। যার ফলে অঞ্চলটি সম্প্রসারিত হয় না, তাপমাত্রা আরও বাড়তে থাকে এবং শক্তি উৎস আরও দ্রুত শক্তি উৎপাদন করতে থাকে। লোহিত দানব শাখার শেষ পর্যায়ে তারার মধ্যে এমনটিই ঘটে। যার ফলে হঠাৎ করে শক্তির একটি ঝলক দেখা যায় যাকে বলা হয় হিলিয়াম ফ্ল্যাশ বা হিলিয়াম ঝলক। 3α বিক্রিয়ার মাধ্যমে হিলিয়াম পুড়ে এই বিক্রিয়ার মাধ্যমে কার্বন উৎপাদিত হয়। এই ঝলকের ঘটনাটিকে এক ধরণের "থার্মাল রানঅ্যাওয়ে" বলা হয়।
  • তবে হিলিয়াম ঝলকের শক্তি রহিত করার পদ্ধতিও আছে।
    1. প্রথমত বিক্রিয়ার মাধ্যমে যে বিপুল পরিমাণ শক্তি বিকিরিত হয় তার প্রায় কোন অংশই তারার পৃষ্ঠে পৌঁছুতে পারে না, বরং হিলিয়াম দহন অঞ্চলের ঠিক বাইরে যেসব নন-ডিজেনারেট পদার্থ আছে তাদের দ্বারা শোষিত হয়। তারা এই শক্তি শোষণ করে প্রসারিত হতে শুরু করে যা হিলিয়াম ঝলকের শক্তি কমিয়ে দেয়।
    2. দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে পরিচলন। শক্তির ফ্লাক্স অনেক বেড়ে যাওয়ায় তাপমাত্রা গ্র্যাডিয়েন্ট বেড়ে গিয়ে অ্যাডায়াবেটিক গ্র্যাডিয়েন্টের চেয়ে বেশি হয়ে যায়, এর ফলে পরিচলন শুরু হয়। পরিচলনের মাধ্যমে শক্তি পুনর্বণ্টিত হয়ে হিলিয়াম ঝলকের বাহাদুরি নাশ করে।
  • এখন তাহলে তারায় দুটি পরিচলন অঞ্চল আছে, একটি এনভেলপে এবং অন্যটি হিলিয়াম দহন অঞ্চলের ঠিক বাইরে। এই দুটি অঞ্চলের মাঝে বাঁধা হয়ে আছে হাইড্রোজেন দহন শেল। মধ্যিখানে শেলটি থাকার কারণে দুই পরিচলন অঞ্চলের মধ্যে এনট্রপি এবং চাপের পার্থক্য অনেক বেশি হয়, যার ফলে তারা মিশতে পারে না।
    • কিন্তু যেসব তারায় অপজাত্য ভয়ানক রকমের বেশি তাদের ক্ষেত্রে হিলিয়াম দহন অঞ্চলের বাইরের পরিচলন অঞ্চল অনেক দূর অগ্রসর হয়ে এনভেলপের সাথে মিশে যেতে পারে। শ্বেত বামন হওয়ার পথে অগ্রসরমান তারা বা প্রচণ্ড ধাতু-স্বল্প তারাদের ক্ষেত্রে এমন হতে পারে।
  • হিলিয়াম প্রথমে জ্বলে উঠে হিলিয়াম কোর ও হাইড্রোজেন শেলের সীমানায়। এই স্থানে তাপমাত্রা হঠাৎ অনেক বেড়ে যাওয়ায় এখানকার অপজাত্য ঝলকের পরপরই দূর হয়ে যায়। কিন্তু তারার একেবারে কেন্দ্রের দিকে অপজাত্য থেকে যায়। পরবর্তীতে আরও কিছু গৌণ ঝলকের মাধ্যমে পুরো কোরের অপজাত্য দূর হতে পারে এবং তারার কেন্দ্রবিন্দুতেও হিলিয়াম দহন শুরু হতে পারে। মনে রাখতে হবে, ঘনত্ব স্থির রেখে তাপমাত্রা বাড়াতে থাকলেই এক সময় অপজাত্য দূর হয়।

টেমপ্লেট:বইয়ের বিষয়শ্রেণী